হাওজা নিউজ এজেন্সি: মনে হতে পারে যে মদ্যপান বা অন্য কোনো নিষিদ্ধ কাজ সাময়িক স্বস্তি দেয়, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা শয়তানের ফাঁদ মাত্র।
সঠিক পথ হলো — পাপ থেকে দূরে থাকা এবং রোগমুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া।
প্রশ্ন: এমন কোনো হাদীস আছে কী-মযেখানে বলা হয়েছে হারাম জিনিসে কোনো শিফা নেই?
উত্তর: এই বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ হাদীস উল্লেখযোগ্য:
১. রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন,
“হারাম জিনিসে কোনো শিফা নেই। আল্লাহ তা’আলা যেসব জিনিস হারাম করেছেন, সেগুলোর মধ্যে তোমাদের জন্য কোনো আরোগ্য রাখেননি।” [১]
২. ইমাম জাফর সাদিক (আ.)-এর নিকট মদের (শরাবের) ওষধি ব্যবহারের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন,
“নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা যেসব বস্তু হারাম করেছেন, তার মধ্যে কোনো ওষুধ বা শিফা রাখেননি।” [২]
৩. ইবনে আবি ইয়াফুর, ইমাম সাদিক (আ.)-কে বললেন, “আমি এমন এক রোগে আক্রান্ত, যা বেড়ে গেলে সামান্য নাবিজ (আঙ্গুরের মদ) পান করি, তাতে ব্যথা কিছুটা কমে।”
ইমাম (আ.) উত্তরে বলেন, ল“(মদ) পান করো না। নিশ্চয়ই এটা হারাম। এটা শয়তানের ফাঁদ, যে তোমাকে হারামের দিকে ধাবিত করতে চায়। তুমি যদি ধৈর্য ধরো, ইনশাআল্লাহ ব্যথা আপনাআপনি সেরে যাবে।”
অতঃপর ইবনে আবি ইয়াফুর মদিনা থেকে বিদায় নিয়ে কুফায় ফিরে আসেন। তাঁর ব্যথা তীব্রতর হয়। আত্মীয়স্বজনেরা তাঁকে নাবিজ খাওয়ানোর জন্য চাপ দেয়, কিন্তু তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, “আল্লাহর কসম, আমি একফোঁটাও (মদ) পান করবো না।”
তিনি কয়েকদিন যন্ত্রণায় ভুগলেন, তারপর ব্যথা একেবারে সেরে যায় এবং জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আর ওই রোগের পুনরাবৃত্তি হয়নি। [৩]
পরিশেষে এটা বলা যায় যে,
হারাম জিনিসে কোনো প্রকৃত আরোগ্য বা শান্তি নেপ্রবৃত্তি ও শয়তানের প্রলোভনে পড়ে কোনো হারাম পানীয় বা নিষিদ্ধ কাজের আশ্রয় নেওয়া উচিত নয়।
রোগ হলে, আমাদের বৈধ ও ন্যায়সংগত উপায়ে চিকিৎসা করাতে হবে এবং অন্তর থেকে আল্লাহর কাছে শিফা প্রার্থনা করতে হবে।
আরও পড়ার জন্য প্রস্তাবিত গ্রন্থ:
১. গুনাহানে কবীরা — আয়াতুল্লাহ শহীদ দাস্তগীব (প্রথম খণ্ড)
২. গুনাহানে কবীরা বিশ্লেষণ — আলী মুহাম্মাদ হায়দারি নরাকী
পাদটীকা (সূত্র):
[১] মুহাম্মদ বাকের মাজলেসি, বিহারুল আনওয়ার, বৈরুত, আল-ওফা ইনস্টিটিউট, দ্বিতীয় মুদ্রণ, ১৪০৩ হিজরি, খণ্ড ৫৭, পৃষ্ঠা ১৬২।
[২] একই, খণ্ড ৫৯, পৃষ্ঠা ৮৬ (তিব্বুল ইমাম থেকে উদ্ধৃত)।
[৩] শায়খ হুর আমেলি, ওসাইলুশ শিয়া, বৈরুত, দার ইহইয়ে আত-তুরাস আল-আরবি, চতুর্থ মুদ্রণ, ১৩৯১ হিজরি, খণ্ড ১৭, পৃষ্ঠা ২৭৭।
আপনার কমেন্ট